
প্রকাশিত: Thu, Dec 15, 2022 4:29 AM আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 7:09 AM
লিওনেল স্কালোনি : নীরব, শান্ত এক জেনারেল!
সাদিকুর রহমান খান
লিওনেল মেসির প্রশংসা আপাতত থাকুক। আরেক লিওনেল, লিওনেল স্কালোনির কথা এবার না বললে বড় ধরনের একটা অন্যায়ই করা হবে। সৌদির সাথে হারার পরে মেক্সিকোর ম্যাচে ডিফেন্স ঠিক রেখে লং পাসে খেলে জয় তুলে নেওয়া। এরপর পোল্যান্ড ম্যাচে আবারও ট্যাকটিকস চেঞ্জ। টানা প্রেস খেলাইলো, উইংরে তুলে বিধ্বংসী একটা জয় তুইলা নিলো। এই ম্যাচ আর্জেন্টিনাকে শুধু নক আউটেই তুলে দ্যায় নাই, ফিরাইয়া দিসে সৌদির কাছে হারানো আত্মবিশ্বাসও। নক আউটের অস্ট্রেলিয়া আর নেদারল্যান্ডস ম্যাচ আর্জেন্টিনা খেলেছে মিড ফিল্ড নিয়ন্ত্রণ করে। ৫টা মিড দিয়া অপোনেন্টের অ্যাটাক ধ্বংস করে দিসে, সাথে বিল্ড আপ অ্যাটাক থেকে দুই ম্যাচে তুলে নিসে অনফিল্ড চারটা গোল। বাট আজকের ম্যাচে স্কালোনি এইটা কী করলো?
জাস্ট আনবিলিভেবল ভাই। আমি নিজেও ভাবসিলাম আবারও মিডলাইন ব্লক করে বিল্ড আপ খেলাতে ক্রোয়েশিয়াকে মোকাবিলা করা হবে। বাট আমার কাছে একটা প্রশ্নের উত্তর ছিলো না, এতো ভালো মিডফিল্ড যে ক্রোয়েশিয়ার, ইনক্লুডিং লিভিং লিজেন্ড লুকা মডরিচ, ওদের মিডফিল্ড ধ্বংস হবে কেমনে? অথচ এই উত্তর স্কালোনির কাছে ছিলো। উত্তর হলো, হাই লাইন ডিফেন্স, প্রেস অ্যান্ড কাউন্টার অ্যাটাক। এই আর্জেন্টিনারে নিয়া কাউন্টার অ্যাটাক করাইয়া সেমিফাইনালে এমন জয় সম্ভব, এইটা মেবি পাগলেও বিশ্বাস করতো না। অথচ, স্কালোনি বিশ্বাস করলেন। এবং ক্রোয়েশিয়াকে স্রেফ ধ্বংস করে দিয়ে একটা মিডিওকোর দলকে নিয়া গেলেন ফাইনালে। আর্জেন্টিনা একটা ফাঁদ পেতে রাখসিলো। ক্রোয়োশিয়া সেই ফাঁদে পা দিসে, আর কিছুই না।
মিডফিল্ডের খেলা আর্জেন্টিনা এক প্রকার ছেড়ে দিয়ে ডিফেন্সে নেমে গেসে, ক্রোয়েশিয়া বারবার লোভে পড়ে অ্যাটাকে যাইয়া কাউন্টার খাইয়া তিনটা গোল খাইয়া গেল। এক্ষেত্রে স্কালোনি সবচে বড় বাজি ধরছিলেন নিজের ডিফেন্সের ওপর। জেনারেল ওটামেন্দিসহ পুরো ডিফেন্স আজকে ছিলো আগুন। একটা চ্যালেঞ্জিং শটও আর্জেন্টিনার গোলবারের দিকে যায়নি। এই যে ম্যাচ ধরে ধরে কৌশল বদলে ফেলা, দলরে সুইট করাইয়া ম্যাচ বের করে আনা, এই পুরো কৃতিত্বটা যায় স্কালোনির হাতে। শুধু ম্যাচের কৌশল না, ইভেন প্লেয়ার সাব্স্টিটিউটেও এই লোকের মাথা ভয়ঙ্কর, ফাইনালের জন্য ডি মারিয়ারে রাইখা দেওয়া, সময় মতো ডি পলরে তুইলা নেওয়া বা লিসান্দ্রো মার্টিনেজের বদলি, সবকিছুই ছিলো একেবারে ছকে মাপা। ভুলভাল সাবস্টিটিউশন যে কতটা ডেডলি হতে পারে, তাঁর সবচে বড় প্রমাণ ব্রাজিলের কোচ তিতে। জাস্ট ভিনির একটা সাবস্টিটিউট, ফ্রেড আর পাকেতার সাবস্টিটিউট ব্রাজিলের মতো এমন ভয়ঙ্কর একটা দলরে কোয়ার্টার থেকে ফেলে দিলো। আমার বিশ্বাস এই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতবে। সবাই প্রিয় লিও মেসিরে নিয়েই সমস্ত গল্প উপন্যাস লিখবে, লেখা উচিতও।
এমি মার্টিনেজ যখন বলছিলেন, মেসির হাতে বিশ্বকাপ তুলে দেওয়ার জন্য আমরা প্রাণ দিতে পারি। এই কথা নিয়া অনেক ট্রল হইসে। বাট, আর্জেন্টিনার দলটা এই বিশ্বকাপটা মেসির জন্য জিততে চায়, এই কথা অস্বীকার করার কিছু নাই। তো, লিওনেল মেসিরে নিয়ে লেখা হাজার গল্প উপন্যাসের ভিড়ে আমাদের আরেক লিওনেল, লিওনেল স্কালোনির কথা ইতিহাস কতটুকু মনে রাখবে আমি জানি না। বাট আমি সবসময়ই ওই এক লিওনেলের নামের ছায়াতে জ্বলতে থাকা আরেক লিওনেলের কথা মনে রাখবো, যে মানুষটা একটা মিডিওকোর দলকে নিয়ে এতোটা আত্মবিশ্বাসের সাথে ফাইনালে তুলতে পারেন। শান্ত, নীরব এক জেনারেল হয়ে যিনি দিয়ে চলেছেন যুদ্ধের ময়দানের সবচে তুখোড় চালগুলো। লিওনেল স্কালোনি, স্যালুট ইউ বস। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
